প্রস্বেদন বা বাষ্পমোচন উদ্ভিদের একটি বিশেষ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। আমরা পূর্বের পাঠে জেনেছি, উদ্ভিদের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য পানি অপরিহার্য। তাই উদ্ভিদ মূলরোমের সাহায্যে মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি শোষণ করে। শোষিত পানির কিছু অংশ উদ্ভিদ তার বিভিন্ন বিপাকীয় কাজে ব্যবহার করে এবং বাকি অংশ বাষ্পাকারে বায়ুমণ্ডলে পরিত্যাগ করে। উদ্ভিদের দেহাভ্যন্তর থেকে পাতার মাধ্যমে বাষ্পাকারে পানির এই নির্গমনের প্রক্রিয়াকে প্রস্বেদন বা বাষ্পমোচন বলে।
প্রস্বেদন প্রধানত পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে হয়। এছাড়া কাণ্ড ও পাতার কিউটিক্স এবং কার্ডের ত্বকে অবস্থিত লেন্টিসেল নামক এক বিশেষ ধরনের অঙ্গের মাধ্যমেও অল্প পরিমাণ প্রবেদন হয়। প্রস্বেদন কোথায় সংঘটিত হচ্ছে তার ভিত্তিতে প্রস্বেদন তিন প্রকার যথা- ১. পত্ররন্দ্রীয় প্রবেদন, ২. ত্বৰ্কীয় বা কিউটিকুলার প্রস্বেদন এবং ৩. লেন্টিকুলার প্রস্বেদন।
সাধারণ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পত্ররন্দ্র এবং খালি চোখে কাণ্ডের লেন্টিসেল সহজে দেখা যায়।
কাজ : প্রস্বেদনের পরীক্ষা প্রয়োজনীয় উপকরণ: টবে লাগানো গাছ, টেবিল, পানি, পলিখিন, সুভা ও ভেসলিন পদ্ধতি : দুটি টবে লাগানো গাছ টেবিলের উপর রেখে গাছের গোড়ায় পরিমাণ মতো পানি দাও। একটি গাছকে পাতার রেখে পলিথিনের মোড়ক দিয়ে ঢেকে দাও | তারপর গাছের গোড়ার পলিথিনটি সূতা দিয়ে বেঁধে ঐ স্থানে ভেসলিনের প্রদেশ দাও। যাতে বাইরের থেকে বাতাস বা পানি যেতে না পারে। অপর গাছটির পাতাগুলো ছিঁড়ে ফেলে একইভাবে প্রথম গাছটির মতো পলিথিন মোড়ক দিয়ে ঢেকে ফেল। গাছ দুটিকে সূর্যের পালোতে রাখ। পর্যবেক্ষণ : কিছুক্ষণ পর দেখবে পাতাযুক্ত গাছের টবে পলিথিনের ভিতরে বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে কিছু পাতাবিহীন গাছের টবে পলিথিনের ভিতরে পানি জমেনি। পাতাযুক্ত গাছের টবে পলিথিনের ভিতরে কেন বিন্দু বিন্দু পানি জমেছে এবং পাতাবিহীন টবে পলিথিনে কেন পানি বিন্দু জমেনি। এ পরীক্ষা থেকে তুমি কী প্রমাণ করলে? তোমার এ পর্যবেক্ষণ থেকে তুমি কী সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। |
আরও দেখুন...